শিক্ষার  মাধ্যম  হিসাবে  মাতৃভাষার  গুরুত্ব

          মাতৃগর্ভ  থেকে  ভূমিষ্ট  হওয়ার  পর  শিশু  ক্রম বিকাশ  এর সঙ্গে সঙ্গে যে  ভাষা শিখে থাকে তা হল তার মাতৃভাষা। 

          শিক্ষার হেরফের প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন ,"আমাদের এই শিক্ষার সহিত জীবনের সামাঞ্জস্য সাধনই এখনকার দিনের সর্বপ্রধান মনযোগের বিষয় হইয়া দাঁড়াইয়াছে। কিন্তু এ মিলন কে সাধন করিতে পারে ?বাংলা ভাষা ,বাংলা সাহিত্য। "    
         শিক্ষার সাঙ্গীকরণ প্রবন্ধে তিনি বলেছেন ,"শিক্ষায় মাতৃভাষাই মাতৃদুগ্ধসম।" 
        শিক্ষা ক্ষেত্রে মাতৃভাষার গুরুত্ব বিভিন্ন ভাবে রয়েছে। যেমন -
 .মাতৃভাষা সংস্কৃতি রক্ষণে সহায়ক :  
        বেদ ,বেদান্ত ,উপনিষদ ,নানা ধর্মগ্রন্থ ইত্যাদি গ্রন্থসমূহ মাতৃভাষায় অনুদিত হয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধিশালী করেছে। 

 .আত্মপ্রকাশের মাধ্যম :
        নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্তভাবে প্রকাশ করার সর্বশ্রেঠ মাধ্যম আর নেই। 
 .সর্বাঙ্গিন বিকাশে সহায়ক :
         শৈশবে যেমন মাতৃদুগ্ধ ছাড়া শিশুর স্বাথর্ক বিকাশ হয়নি তেমনি মাতৃভাষায় শিক্ষাদান করা না হলে সে শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না
  .বৌদ্ধিক বিকাশে সহায়ক :
          মাতৃভাষায় অনুশীলনের মাধ্যমে বুদ্ধির বিকাশ অব্যাহত ও সাবলীল থাকে। 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন,"জ্ঞান বিজ্ঞান যেখানকার হউক ভাষা মাতার মতো হওয়া চাই। "
  .মাতৃভাষা ভাববিকাশের ও ভাবগ্রহনের সর্বশ্রেঠ মাধ্যম :
           মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। 
           বাইরের কোনো ভাবকে বা ধারনাকে গ্রহণ করার সবচেয়ে তৃপ্তিকর ও সহজতর মাধ্যম হল মাতৃভাষা।
 .প্রতিভাস্ফুরণে সহায়তা করে :
          মাতৃভাষা ভোরের আলোর মতো অত্যন্ত সহজে মানুষের মনের ঘুমন্ত শক্তিকে জাগ্রত করে তার পরিপূর্ণ বিকাশের পথকে প্রশস্ত করে।
   ৭.ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে : 
           মাতৃভাষার মাধ্যমে গ্রামগঞ্জে ,হাটে বাজারে একে অপরের কথোপকথনের প্রধান মাধ্যম হল মাতৃভাষা। এর ফলে    ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
  .সময়ের অপচয় রোধ করে :
           বিদেশি ভাষায় কোনো জটিল বিষয়কে আত্মস্থ করতে অধিক সময়, অধ্যাবসায় ও অনুশীলনের প্রয়োজন হয় কিন্তু মাতৃভাষার মাধ্যমে তা অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ে অধিগত করা সম্ভব হয়।
    ৯.মাতৃভাষা সামাজিকীকরণের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম :
           সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ভাবের আদান প্রদানের সর্বশ্রেঠ মাধ্যম হল মাতৃভাষা। যা সকল জনগণের  ভাষা। 
   ১০.মাতৃভাষাসৌন্দর্য্য চেতনা ও সৃজনী শক্তির বিকাশে সহায়ক :
           মাতৃভাষার মাধ্যমে আপন সৃজনী শক্তির চরম বিকাশ ঘটানো সম্ভব। সাহিত্য সৃষ্টিতে ,বিজ্ঞান চিন্তার মৌলিকতায় মাতৃভাষার ভূমিকা অসামান্য। 
                         এছাড়া মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দিলে শিক্ষার্থীর উন্নত রুচিবোধ ,জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ জন্মায়। দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সংস্কৃ প্রতি তারা শ্রদ্ধাবান হয়ে ওঠে। তাই মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান করা একান্ত জরুরি।
 

























































































 

Comments

  1. জাতি গঠনে মাতৃভাষার গুরুত্ব রচনাটা দেওয়া যাবে

    ReplyDelete

Post a Comment